ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়ে তাণ্ডব শুরু করেছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উড়িষ্যা উপকূলে চলছে প্রবল বৃষ্টি আর দমকা বাতাস। সাগর ফুলে ওঠায় প্লাবিত হয়েছে উপকূলের নিচু এলাকা। জান-মাল রক্ষায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
ইয়াসের তাণ্ডবে ইতোমধ্যে দেশটিতে তিনজনের মৃত্যুর পাওয়া গেছে। এই তাণ্ডব আরও কিছু সময় চলবে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর। ইয়াসের সরাসরি সম্প্রচার করতে গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা টিভির একটি টিম। সঞ্চালিকা সুচন্দ্রিমার নেতৃত্বে কলকাতা টিভির টিম সেখানে গিয়েছিল।
লাইভ চলাকালে ইয়াস আঘাত হানে। এতে কলকাতা টিভির গাড়ি নিয়ে সাংবাদিকরা সেখান থেকে সরে আসার সুযোগ পায়নি। চালক গাড়ি ঘুরানোর সময় জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। কোনো রকমে সাংবাদিকরা গাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর পানির তোড়ে গাড়ি ভেসে যায়। মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা কলকাতা টিভির সঞ্চালিকা সূচন্দ্রিমা ইয়াসের তাণ্ডব জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি পরে ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, এতোটা অসহায় বোধ কোনোদিনও করিনি। কোনো কিছুকে ভয় পাই না। দীঘার সমুদ্রতীরে লাইভ সম্প্রচার করার সময় অল্পের জন্যে বেঁচে যান কলকাতা টিভির সঞ্চালিকা সূচন্দ্রিমা দত্ত। কোনোরকমে প্রাণে বাঁচেন গাড়ির ড্রাইভার চন্দু এবং সঙ্গী ক্যামেরাম্যান। লাইভ সম্প্রচার চলার সময়ই পাহাড় প্রমাণ একটি ঢেউ এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় তিনজনকেই।
অন্য চ্যানেলের সাংবাদিকদের চেষ্টায় কোনরকমে প্রাণে বাঁচেন সূচন্দ্রিমা ও সঙ্গীরা। ইয়াস-এর প্রতিক্রিয়া কভার করতে তারা দীঘায় এসেছিলেন। দীঘায় আচম্বিতে এই জলোচ্ছ্বাসে বিপন্ন হন সবাই। সৈকতাবাসে আটকে পড়েন তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রী অখিল গিরি ও কয়েকজন সাংবাদিক। প্রচুর গাড়ি ঢেউয়ে ভেসে যায়। পশ্চিমবঙ্গের দীঘা সৈকত থেকে আসা ছবিতে দেখা গেছে, প্রবল বাতাসে নুয়ে পড়ছে গাছ।
উপকূলীয় অনেক এলাকায় জোয়ারের পানি উঠে রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। হাঁটু পানির মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে মানুষ। ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, ওড়িশার জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক ও বালাশোর জেলা ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা লাগতে পারে সবচেয়ে বেশি। আর পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদেনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে ঝড়ো বাতাসের তাণ্ডব।